আপডেট

x

রায়ে অপমানে সইতে না পেরে সালিশে মসজিদ কমিটির সভাপতির মৃত্যু

শুক্রবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ |

রায়ে অপমানে সইতে না পেরে সালিশে মসজিদ কমিটির সভাপতির মৃত্যু
Spread the love

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বিনাদোষে সালিশকারকরা মসজিদ কমিটির সভাপতিকে বাতিল করায় অপমান সইতে না পেরে ঘটনাস্থলেই হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেলেন আবদুর রহমান (৫৫) নামে এক ব্যক্তি। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।। আবদুর রহমান এই মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন। ৪০ বছর আগে তারই নিজ উদ্যোগে গড়া হয়েছিলো এই মসজিদ। পরিবারের লোকজন মামলা করতে এলে থানার গেট থেকেই স্থানীয় নেতারা ফিরিয়ে দিয়েছেন এমন অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বাদ যোহর মৃত আবদুর রহমানকে নামাজে জানাযা শেষে দাফন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় মানুষের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। আবদুর রহমানের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

webnewsdesign.com

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামে মসজিদের ইমাম মনিরুজ্জামানের নৈতিকতার বিষয় নিয়ে দুটো দলে বিভক্ত হয় পড়ে গ্রামের লোকজন। সেই ইমামকে নিয়ে গত ৭ জুলাই মসজিদে মিটিং বসে। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক বিতর্ক হয় এবং এক পর্যায়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়। নিহতের বড় ভাই আবদুর রহিমের লোকজনের সাথে অপরপক্ষ লালু মিয়া গ্রুপের মারামারি হয়। এতে আবদুর রহিমের হাত ভেংগে যায় এবং তার পুত্র হাবিবুর রহমানের চোখে রক্তাক্ত জখম হয়। এঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’দলে মামলা মোকদ্দমা হলে পুলিশ লালুকে গ্রেপ্তার করে।

পরে স্থানীয় বায়েক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ন আহবায়ক নুরন্নবী আজমল বিচার করে দেবেন বলে গত ১ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধায় সালিশ সভার আয়োজন করে মসজিদের পাশের বাড়িতে। বায়েক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন ভুইয়ার সভাপতিত্বে সালিশ পরিচালনা করেন নুরন্নবী আজমল। বিচারে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন;ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুর রশিদ, নাজমুল মিয়া, আলআমিন মালদার, সেলিম মেম্বার, সিদ্দিকুর রহমানসহ আরো কিছু লোকজন। সালিশে মসজিদ কমিটির সভাপতিকে কোনো কারন ছাড়া বহিষ্কার করে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিলে আবদুর রহমান অপমান সইতে না পেরে তাৎক্ষনিক স্ট্রোক করেন এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন।

আবদুর রহিমের পুত্র হাবিবুর রহমান জানান, আমরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি অথচ আমাদের উপরই বিচারকরা অবিচার করেছেন। আমরা গতকাল মামলা করতে গিয়েছিলাম কিন্তু স্থানীয় নেতারা আমাদের ফিরিয়ে এনেছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভুইয়া জীবন নিহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সসমবেদনা জানিয়ে সকলকে শান্ত থাকার কথা বলেন।

একই গ্রামের নজরুল ইসলাম,জাহাঙ্গীর আলম জানান ;আবদুর রহমান খুব ভালো মানুষ ছিলেন। গত ৪০ বছর যাবত তিনি মসজিদের সঙ্গে উৎপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। । বিনা দোষে তাকে বাদ দেয়ার বিষটি তার উপর অবিচার করা হয়েছে। তিনি অপমান সহ্য করতে পারেননি।
নিহত আবদুর রহমানের স্ত্রী নুরজাহান বেগম জানান আমার স্বামীর আয়ু এপর্যন্তই ছিলো। মামলা করলে আর কী হবে?

প্রতিপক্ষ লালু মিয়া বলেন, আমিও মসজিদের ক্যাশিয়ার ছিলাম। আবদুর রহমানের সংগে আমার কোনো ঝগড়া ছিলো না। মসজিদের ইমামকে নিয়ে ঝগড়া হয়েছে তাঁর ভাই ও ভাতিজার সঙ্গে। ইমামের চরিত্র ভালনা। তিনি এই ইমামের পিছনে নামাজ পড়েন না।

সালিশ সভার সভাপতি বায়েক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন ভুইয়া বলেন,লালু মিয়াকে আমরা রহিম ও রহিমের ছেলের চিকিৎসার জন্য পঁচাত্তোর হাজার টাকা জরিমানা করেছি। অপরদিকে নতুন করে কমিটির কথা বললে আবদুর রহমান ঢলে পরে মারা যান।

এ বিষয়ে কসবা থানা অফিসার্স ইনচার্জ মুহাম্মদ আলমগীর ভুইয়ার সংগে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, গত দুমাস আগের মারামারির ঘটনার মামলায় তিনি কোর্টে চার্জশিট দিয়েছেন। গত বুধবারের ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তিনি বলেন, কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেননি। কেউ অভিযোগ নিয়ে এলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com