আপডেট

x

নাসিরনগর হামলায় তিন চার্জশিটভুক্ত আসামী পেলেন আ’লীগের মনোনয়ন!

বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১ | ১০:২৬ অপরাহ্ণ |

নাসিরনগর হামলায় তিন চার্জশিটভুক্ত আসামী পেলেন আ’লীগের মনোনয়ন!
Spread the love

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নিয়ে তোলপাড় চলছে। এই তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসিরনগরে মন্দিরে ভাংচুর মামলার চার্টশিটভুক্ত আসামী। এর মধ্যে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করতে জেলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা আগামী আগামী ১১নভেম্বর ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় ভাবে থেকে ১৩টি চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।

webnewsdesign.com

আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তরা হলেন, গুনিয়াউক ইউনিয়নে জিতু মিয়া, ভলাকুট ইউনিয়নে রুবেল মিয়া, গোকর্ণ ইউনিয়নে ছোয়াব আহমেদ হৃতুল, হরিপুর ইউনিয়নে দেওয়ান আতিকুর রহমান আখি, কুন্ডা ইউনিয়নে মো. ওয়াছ আলী, পূর্বভাগ ইউনিয়নে মো. আক্তার মিয়া, বুড়িশ্বর ইউনিয়নে এটিএম মোজাম্মেল হক সরকার, ধরমন্ডল ইউনিয়নে মো. বাহার উদ্দিন চৌধুরী, চাপড়তলা ইউনিয়নে মনসুর আলী ভূইয়া, চাতলপাড় ইউনিয়নে শেখ আব্দুল আহাদ, ফান্দাউক ইউনিয়নে ফারুকুজ্জামান ফারুক, গোয়ালনগর ইউনিয়নে মো. কিরন মিয়া ও নাসিরনগর ইউনিয়নে মো. আবুল হাশেম।

এদিকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের থেকে নাসিরনগর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। মনোনয়ন প্রাপ্ত চেয়ারম্যানদের মধ্যে তিনজন ২০১৬ সালে দেশজুড়ে আলোচিত নাসিরনগরে মন্দির ভাঙ্গা মামলার চার্জশিট ভূক্ত আসামী। নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো: আবুল হাশেম, হরিপুর ইউনিয়নের দেওয়ান আতিকুর রহমান ও পূর্বভাগ ইউনিয়নে মনোনয়ন পাওয়া মো. আক্তার মিয়াকে মনোনয়ন দেয়ায় অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে দলের তৃনমূল পর্যায়ে নেতাকমীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর ফেইসবুকে গুজব রটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে তান্ডব চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১০টি মন্দির সহ অন্তত শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়।এই ঘটনায় নাসিরনগর গৌরমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন ২০১৭সালের ১০ডিসেম্বর ২২৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে এই মামলায় চার্টশিট জমা দেন। চার্টশিটে ২২৮জন আসামির মধ্যে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ প্রচার সম্পাদক মো. আবুল হাসেম, হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান ও পূর্বভাগ ইউনিয়নে মো. আক্তার মিয়ার নাম উল্লেখ্য করা হয়। অভিযুক্তরা বর্তমানে চেয়ারম্যান জামিনে রয়েছেন।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের একটি নির্ভর যোগ্য সূত্র জানায়, এনিয়ে তৃনমূল পর্যায়ে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করায় আলোচিত তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিষয় জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে বিষয়টি কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগকে মনোনয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছিল। চেয়ারম্যানদের তাদের তালিকা পাঠানোর সময় তারা যে মন্দির ভাঙ্গা মামলার চার্টশিট ভূক্ত আসামী সেটি উল্লেখ করা হয়েছিল। তার পরও কিভাবে তারা মনোনয়ন পেল সেটি এখন আলোচনার বিষয়।

এ ব্যাপারে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেম এর বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে
তিনি রিসিভ করেননি।

তবে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক আল মামুন সরকার আমাদের বলেছিলেন, প্রত্যেক চেয়ারম্যান প্রার্থীদের আমলনামার ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়া হবে। আমি মনে করি আমার আমল নামার ভিত্তিতে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমি এ জন্যে খুশি। ইনশাল্লাহ এবারো নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবো।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার বলেন, আওয়ামীলীগ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী দল। সে স্থানে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা সাম্প্রদায়িকতা জন্য সামাজিকভাবে চিহ্নিত হয়েছে। আবুল হাশেম ও দেওয়ান আতিকুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল করতে কেন্দ্রে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র থেকে ইতিমধ্যে মুঠোফোনে আমাদেরকে জানিয়েছে, দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হবে। আগামীকালকের মধ্যে নতুন প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com