৭০ বছরের কৃষক বৃদ্ধ মোহাম্মদ সরল মিয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের রাজঘর গ্রামে। নাম যেমন সরল মিয়া, মানুষটিও সরল স্বভাবের। তার স্ত্রী সখিনা বেগম (৫৫) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে গত এক সপ্তাহ আগে। গত তিনদিন আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। বৃদ্ধ সরল মিয়া বিয়ের পর স্ত্রীকে ছাড়া কখনো ঈদ করেননি। করোনার মহামারীতে আক্রান্ত হওয়ায় এবার হাসপাতালের আইসোলেশনে তার স্ত্রীকে ঈদ করতে হচ্ছে। তাই বাড়িতে স্ত্রীকে ঈদের দিনে না দেখে থাকতে পারেননি তিনি। ছুটে এসেছেন আইসোলেশন চিকিৎসাধীন স্ত্রীকে দেখতে। হাসপাতালের ভেতরে গ্লাসে ঘেরা আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগী, চিকিৎসক ও সেবাদানকারী নার্স ছাড়া কেউ ঢুকার অনুমতি নেই। সরল মিয়াকেও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঢুকার অনুমতি দেয়নি দায়িত্ব পালনকারীরা। কিন্তু স্ত্রীর কাছে যাবেনই সরল মিয়া। অবশেষে গ্লাসে ঘেরা আইসোলেশনে ঢুকলেন তিনি। শুক্রবার ঈদের দিন নামাজের পর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আইসোলেশনে অবস্থান করেন সরল মিয়া। পরে বের হয়ে বাড়িতে ফিরে যান।
বৃদ্ধ সরল মিয়ার সাথে কথা হয় জাগোনিউজের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি আবুল হাসনাত মো. রাফি’র সাথে। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয় করবো কেন? আল্লাহ দিলে কি করা যাবে। মরণ তো একদিন হবেই। সব আল্লাহর ইচ্ছা। তিনি বলেন, আমার সন্তানেরা বাড়িতে আছেন। তারা তাদের মায়ের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। বাড়িতে ভাল লাগছিল না। তাই তাকে (স্ত্রীকে)হাসপাতালে দেখতে আসলাম’।
২৫০শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় আইসোলেশন সেন্টারে ডুকা ঠিক নয়। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যারা আইশোলেশন থেকে বাড়িতে ফিরে যাবে, তারা নিজেরা সংক্রমিত হলে পরিবারের সদস্যদের জন্য ঝুঁকি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঈদের দিন চারজন চিকিৎসা নিচ্ছেন। নেগেটিভ আসায় একজন আজকে রিলিজ পাবেন। ঈদের দিন আইসোলেশন ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগীদের তিন বেলা উন্নত খাবার পরিবেশন করা হবে।
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন