দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৪৬ লাখ (জুন ২০১৯ পর্যন্ত)। এই জনসংখ্যার ৯ শতাংশ অর্থাৎ ১ কোটি ৪৮ লাখ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার। সব বিদ্যালয়ের গুণগত মান সমান নয়। কোন একটি বিদ্যালয়ে পড়াশুনার গুণগত মানের সাথে ঐ বিদ্যালয়ের সুনাম জড়িত। আর বিদ্যালয়ের সুনাম নির্ভর করে পরীক্ষার ফলাফল, বিভিন্ন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার অর্জনের উপর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা শিক্ষকগন সব সময়ই তাঁর প্রতিষ্ঠানের সুনাম চান। কেননা প্রতিষ্ঠানের সুনাম প্রকারান্তরে শিক্ষকগনেরই সুনাম। এই সুনাম তথা সম্মানই একজন শিক্ষককে পরিপূর্ণ আনন্দ দিতে পারে যা বেতন, বোনাস, কিংবা প্রনোদনা দ্বারা সম্ভব নয়। আর শিক্ষক কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুনাম যারা বয়ে আনে তারা আর কেউ নয় এসব শিক্ষক কিংবা মানুষ গড়ার কারিগর কর্তৃক যত্নে গড়ে ওঠা কোমলমতী শিক্ষার্থীরাই। একজন ছাত্রের ক্লাসে মনোযোগ, আগ্রহ, যথাযথ ফিডব্যাক, শৃঙ্খলা, নিয়মানুবতির্তা, সক্ষমতা ও এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস এ পারদশির্তা সহজেই শিক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, দেয় আনন্দ। পরবর্তীতে শিক্ষকের সুনজর ও সঠিক গাইডলাইন ঐ ছাত্রকে আরো এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। আর একজন শিক্ষকের সুনজর ও সঠিক গাইডলাইন ঐ ছাত্রের উপর আর্শীবাদই বটে।
তাই বলে অন্য ছাত্ররা আর্শীবাদ বঞ্চিত বিষয়টি এমন নয়। বরং তাদের মনোযোগ, শৃঙ্খলা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অধিকতর যত্ন ও নজরদারি তথা আর্শীবাদ প্রয়োজন। তবে তাদের অমনোযোগ, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ কিংবা অনিয়মানুবর্তিতা কাটিয়ে তুলতে শিক্ষক কর্তৃক অধিকতর যত্ন ও গাইডলাইন যখন বিফলে যায় তখন এ শিক্ষক নিশ্চয়ই আনন্দ পান না। যে ছাত্রকে নিয়ে শিক্ষক গর্ব করতে পারে, যে ছাত্রের পারফরমেন্স শিক্ষককে আনন্দ দেয় সে ছাত্র নি:সন্দেহে আর্শীবাদপুষ্ট।
একজন অভিভাবক যখন তার সন্তানের শিক্ষকের কাছ থেকে সন্তানের পারফরমেন্স বিষয়ক ইতিবাচক, প্রশংসাসূচক কিংবা সন্তোষজনক মন্তব্য শুনে তখন সেই অভিভাবকের বুক গর্বে ভরে যায়, ঝরে আনন্দাশ্রু। এই আনন্দাশ্রুটুকুও সন্তানের জন্য আর্শীবাদ। সকল ছাত্রের জন্য শিক্ষকের এবং সকল সন্তানের জন্য মা-বাবার আনন্দাশ্রু ঝরুক, আরো ঝরুক। আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়েই লকলক করে বেড়ে ওঠুক কোমলমতী শিশুরা।
লেখক-
মো. নাজিমুল হায়দার
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)
আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
রাফি//–
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন