আপডেট

x

মাহে রমজানে বাত ব্যাথায় করনীয়

রবিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২০ | ৫:১৪ অপরাহ্ণ |

মাহে রমজানে বাত ব্যাথায় করনীয়
Spread the love

মহান আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের মাস মাহে রমজান। এই মাসে রোজা রাখার পাশাপাশি তারাবির নামাজ পড়ার জন্য অনেক রোগী আল্লাহর রহমতে শারীরিক ভাবে ভালো থাকেন।

পবিত্র কুরআন শরীফ এ বর্ণিত,
“যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন”। –[সূরা আশ-শো’আরা ( মক্কায় অবতীর্ণ ),সুরা নং ২৬) আয়াত ৮০]

webnewsdesign.com

নামাজ ও ব্যায়াম:
কতিপয় বাত-ব্যথা রোগী বিশেষ করে যারা তীব্র হাঁটু বা কোমর ব্যাথায় আক্রান্ত তারা বেশ অসুবিধায় পড়ে যান। তাই তাদের জন্য বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। যারা দাঁড়িয়ে নামাজ পড়লে সমস্যা বোধ করেন তারা বসেই নামাজ পড়ুন। যাদের বেশি সমস্যা হয় না তারা ফরজ নামাজ স্বাভাবিক নিয়মে এবং বাকি নামাজ বসে পড়তে পারেন। তবে যারা ব্যথা থাকা সত্ত্বেও স্বাভাবিক নিয়মে নামাজ আদায় করলে কোনো ধরনের অসুবিধা বোধ করেন না তারা স্বাভাবিক নিয়মেই সব নামাজ আদায় করুন। মনে রাখবেন নামাজ শ্রেষ্ঠ ইবাদত, শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম। কোমরে বেল্ট পরে বা হাঁটুর ক্যাপ পরে নামাজ পড়বেন না, এতে অস্বস্তি আরও বাড়বে।

আর বেশির ভাগ দীর্ঘ মেয়াদি ব্যাথা নিরাময়ের জন্য ব্যায়াম খুবই উপকারী। এই মাসে অনেক ব্যাথার রোগী ক্লান্ত থাকার কারণে নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করতে আলসেমি করেন। রমজান মাসে অনেকেই সময় বের করতে পারেন না। এবারের রমজানে করোনার কারণে ও অনেকে বাইরে হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে সুযোগ থাকলে বাসায়, আঙিনায় বা মেশিনে হাঁটবেন।
এক্ষেত্রে উপদেশ থাকবে সেহরির পূর্বে অথবা ইফতারির দুই ঘণ্টা পরে হালকা ব্যায়াম করুন, শরীর ঝরঝরে থাকবে এবং ব্যায়ামের কারণে কোনো দুর্বলতা বোধ করবেন না।

ব্যাথার ঔষধ:
আর একটি বিষয় হলো রমজান মাসে ব্যাথার ওষুধ সেবনে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সারাদিন রোজা রাখায় পাকস্থলী খালি থাকে ফলে ব্যাথার ওষুধ পাকস্থলীতে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। ব্যথার ঔষধ অবশ্যই ভরা পেটে খাবেন। প্রচুর পানি পান করবেন, তাহলে কিডনির ক্ষতি হবার সম্ভাবনা কমবে।

মাথা ব্যাথা:
লক্ষণীয় যে, এই মাসে মাথা ব্যাথা, মাইগ্রেন বাড়ে। এটা পানি স্বল্পতা, ক্ষুধা, চা বা কফি খাওয়া যায় না, ইফতারের ভাজা পোড়া, তৈলাক্ত, চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ার জন্যে হতে পারে। তাই এই মাসে সহজ পাচ্য খাবার, ফলমূল, শাক সবজি, ডিম, মাছ ইত্যাদি খাবে, এক ঘন্টা পরপর এক গ্লাস পানি পান করবেন। নিয়মিত কোন ঔষধ প্রেস্ক্রাইব করা থাকলে সেগুলো বন্ধ করবেন না।

ওজন কমান:
যাদের ওজন বেশি তাদের জন্য রমজান ওজন কমানোর একটি বিরাট সুযোগ । ভাজাপোড়া, মিষ্টি জাতীয় খাবার, চিনি পরিহার করুন। অন্য সময়ের চেয়ে পরিমিত খাবার গ্রহণ করে এই এক মাসে ওজন কমিয়ে নিতে পারেন।

আমল:
ব্যাথা নিরাময়ে বিভিন্ন আমল করতে পারেন। যেমন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ব্যাথার স্থানে ডান হাত দিয়ে মেসেজ করত নিম্নলিখিত দোয়া ৭বার পড়তে

বিসমিল্লাহ –
‘আউজু বি’জাতিল্লাহি‌ ওয়া কুদরাতিহি ওয়া সুলতানিহি মিন শাররি মি আজিদু’। অর্থাৎ
আল্লাহ প্রতাপ ও তাঁর ক্ষমতার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি এবং ঐ বস্তু হতে, যা অনুভব করছি ও আশংকা করছি, তার অনিষ্ট হতে (মুসলিম ও মিশকাত)।

পরিশেষে:
নিয়মিত চিকিৎসা, সঠিক খাদ্যভ্যাস, ব্যায়াম, পজেটিভ মানসিকতা, আল্লাহ তাআলার ইচ্ছে পারে আপনার ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে।
মহান আল্লাহর কাছে আপনার যেকোন বেদনার জন্যে প্রার্থনা করুন, সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করুন, চিকিৎসক কর্তৃক প্রদত্ত নিয়ম মানুন।

ব্যাথা তীব্র হলে একজন পেইন ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট এর শরণাপন্ন হোন।

ভালো থাকুন।
নিরাপদ ও ব্যাথা মুক্ত জীবনের প্রত্যাশায়।

ডাঃ সৈয়দ আরিফুল ইসলাম
এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), এমডি (বিএসএমএমইউ), এফআইপিএম (ইন্ডিয়া), ইন্টারভেনশনাল পেইন ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল।

চেম্বার:
প্রতিদিন
পেইন কেয়ার এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার,
ট্যাংকের পূর্ব পাড়,
(ন্যাশনাল হাসপাতাল এর পরে)
+8801735-199600

( অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করে প্রকাশ করা আইন পরিপন্থী) 

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com