আপডেট

x

বেসরকারি শিক্ষকদের ‘পক্ষে’ হঠকারীতাপূর্ণ স্মারকলিপি

সোমবার, ১৮ মে ২০২০ | ১০:৪২ অপরাহ্ণ |

বেসরকারি শিক্ষকদের ‘পক্ষে’ হঠকারীতাপূর্ণ স্মারকলিপি
Spread the love

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের সুদবিহীন ঋণ প্রদানসহ পাঁচ দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদানকে আমি হঠকারী প্রস্তাব বলে মনে করছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষকদের সুদবিহীন ঋণ প্রদানসহ পাঁচটি প্রস্তাবের দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। সোমবার দুপুর একটার দিকে জেলা প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফোরাম নামের এক সংগঠন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খানের কাছে এই স্মারকলিপি জমা দেন।

webnewsdesign.com

স্মারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কিন্ডারগার্টেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক কলেজসহ সহস্রাধিক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে কমবেশি পঞ্চাশ হাজার শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়াও বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

এতে দাবি করা হয়, জেলার বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শিক্ষকসহ জনবলের বেতন, বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য খরচ এসব প্রতিষ্ঠানকেই বহন করতে হয়। এসব খরচ নির্বাহের জন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে আদায়কৃত বেতনের উপর নির্ভর করতে হয়। বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার থেকে আংশিক বা পুরোপুরি কোনো ধরনের আর্থিক সুবিধা পায় না। যেকারণে প্রতিষ্ঠানগুলো কখনোই সরকারি কোনো অনুদানের আওতায় আসে না। প্রতিষ্ঠান পরিচালক বা মালিকের পক্ষেও এই বিশাল অংকের খরচ মেটানোর আর্থিক সংগতি থাকে না! তাই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন গ্রহণ করা না গেলে সংশ্লিষ্ট জনবলের মাসিক বেতন পরিশোধ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়!

প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফোরাম করোনাকাল পার করতে জেলার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য সুদবিহীন ঋণের প্রস্তাব করেন। যা করোনা মহামারি কেটে গেলে মাসিক কিস্তিতে “শিক্ষকরা” ঋণ পরিাশোধ করবেন!

আবার সেই সাথে স্কুল মালিক পক্ষের স্বার্থে অনলাইনে, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রতিষ্ঠানের মাসিক টিউশন বেতন আদায়ের অনুমতির প্রস্তাব করেন!

শিক্ষকরা তাদের নামে ঋণ নেবেন। করোনা শেষ হলে সেই ঋণ নিজেরাই পরিশোধ করবেন! কতো বড় হঠকারী প্রস্তাব! এখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় নেই?

বেসরকারি স্কুল মালিকেরা যে সারা বছর এক একজন ছাত্র থেকে ৬০০-১০০০৳ করে বেতন নেন আর শিক্ষকদের মাসিক ৩-৫,০০০৳ করে বেতন দেন আমরা কিন্তু জানি। স্কুলগুলো থেকে এর মালিকেরা কতো আয় করেছেন তা খতিয়ে দেখা উচিত দুদকের।

এই সস্তা, বিবেকবর্জিত প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কথা বলুন শিক্ষকরা। স্কুল কর্তৃপক্ষ ঋণ নিক। সেই ঋণে শিক্ষকদের বেতন দিক। করোনা গেলে স্কুলের আয় থেকে তারাই সেই ঋণ শোধ করবেন।

করোনাকাল কেটে গেলে ভিন্ন কোন কাজের খোঁজ করুন শিক্ষক বন্ধুরা। যেনো অদূর ভবিষ্যতে ৩-৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে আর কোন শিক্ষককে কলুর বলদ না বানানো যায়।

বেসরকারি স্কুলগুলোকে এমপিওভুক্ত করা হোক। এসবের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সরকার নিক। শুধু লাভটুকু খাবো, বিপদে কেটে পড়বো- এই স্কুল মালিক পক্ষ দিয়ে কি হবে?

লেখক-
অনলাইন এক্টিভিস্ট

(লেখা মতামত কলামের সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব লেখকের নিজের)

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com