বন্ধ হোক অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান

বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৯ | ৭:৩৮ অপরাহ্ণ |

বন্ধ হোক অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান
Spread the love

ইদানিং নারীরা গর্ভবতী হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের মাধ্যমে শিশু জন্ম দিয়ে থাকে। অতীতে সিজারিয়ানের চেয়ে নরমাল ডেলিভারিতে প্রসব ছিল। সিজারিয়ান অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকি ডেকে আনে।

সিজারিয়ান সেকশন (Caesarean Section), যা সি-সেকশন (C-section ) বা সিজার (Caesar) নামেও পরিচিত। এটি এক প্রকার শল্যচিকিৎসা, যা এক বা একাধিক শিশু জন্মদানের ক্ষেত্রে মায়ের উদর ও জরায়ুতে সম্পন্ন করা হয়।

webnewsdesign.com

এটি সাধারণত করা হয় তখনই, যখন প্রাকৃতিক নিয়মে স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব হয় না বা সম্ভব করতে গেলে মায়ের অথবা শিশুর জীবন বা স্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। যদিও আজকাল প্রাকৃতিকভাবে জন্মদান সম্ভব হলেও অনেক মা সিজারিয়ানের মাধ্যমে শিশু জন্মদানের জন্য অনুরোধ করেন। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরামর্শ দেয় যে, কোনো দেশে সিজারিয়ানের মাধ্যমে শিশু জন্মদানের হার যেন মোট জন্মহারের ১৫ ভাগের বেশি না হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রসব সিজারিয়ান বা সি-সেকশনে করানোর সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে অথচ আমাদের দেশে এই হার প্রায় ৩ গুণ হয়ে গেছে। গবেষণার তথ্যমতে, সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব হলে প্রতিটি অপারেশনের জন্য গড়ে ২১ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

অপরদিকে স্বাভাবিকভাবে জন্ম হলে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে-২০১৪ (বিডিএইচএস)-এর তথ্যানুযায়ী, দেশের হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোয় ১০টির মধ্যে ৬টি শিশুরই জন্ম হচ্ছে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে। এ ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ অস্ত্রোপচার হচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। সমাজের শিক্ষিত ও সচ্ছল পরিবারের ৫০ শতাংশ শিশুর জন্ম হচ্ছে অস্ত্রোপচারে। শিক্ষিতদের মধ্যে সিজারিয়ানের হার বেশি বলে আইসিডিডিআর,বি-র গবেষণায় উঠে এসেছে।

যে কোনো সার্জারি করতে গেলে অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তারদের কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। যেমন- মায়ের রক্তক্ষরণ হওয়া, খাবার নালি ও প্রস্রাবের থলিসহ মায়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ইনজুরি হওয়া ইত্যাদি।

এমন কোনো পরিস্থিতি যদি হয় এবং সেটা যদি মায়ের থার্ড বা ফোর্থ টাইম সিজার হয়; তাহলে মায়ের জন্য ঝুঁকির বিষয় হচ্ছে- তাকে সারা জীবন ভুগতে হবে।

দিন দিন সিজারিয়ান অপারেশনের হার বৃদ্ধির জন্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর অর্থলিপ্সা, সরকারি ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু না হওয়া এবং চিকিৎসকদের নৈতিকতার ঘাটতিকে দায়ী করেছেন গবেষকরা।

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com