গত শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নবীনগরে নিখোঁজে হবার ৮দিন পর ফাতেমা আক্তার (১০) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে নবীনগর থানা পুলিশ। এই ঘটনায় নবীনগর একটি অজ্ঞাত মামলা করে নিহত মাদ্রাসা ছাত্রী ফাতেমা মা পারভীন আক্তার। এই হত্যাকাণ্ডে ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার শাহপুর গ্রামের জামাল মিয়া ছেলে আবু রায়হান (২১) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বুধবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রথম এর হাকিম সারোয়ার আলমে কাছে ১৬৪ জবানবন্দি দেয় আবু রায়হান। এই সময় সে এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে কাছে ঘটনার দিনের কথা বর্ণনা করেন।
জানা যায়, নিহত মাদ্রাসা ছাত্রী ফাতেমা আক্তার (১০) অভিযুক্ত আবু রায়হানের বোনের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। অভিযুক্ত আবু রায়হানের বোনের নামও ফাতেমা আক্তার।
একই মাদ্রাসার একই শ্রেণীতে পড়ার সুবাদে ফাতেমা আক্তার তার বান্ধবীর সাথে দেখা করতে নিয়মিত আবু রায়হানের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো।
ঘটনার দিন ২২ আগস্ট বিকালে ফাতেমা আক্তার তার বান্ধবীর বাড়িতে আসে। সেদিন তার বান্ধবী বাসায় না থাকার সুযোগে সন্ধ্যার সময় আবু রায়হান তাকে তাদের গ্রামের শাহপুর পূর্বপাড়ায় পুকুরের পাড়ে একটি গাছে পেয়ারা খাওয়ার অফার করে। পেয়ারা খাওয়ার জন্য ফাতেমা আক্তার তার সাথে গেলে সাথে সাথে পুকুরের নির্জন স্থানে তাকে ধর্ষণ করে। এই সময় ফাতেমা আক্তার চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে এই ঘটনা যাতে কেউ না বুঝতে পারে তাই সে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করে এবং ফাতেমা আক্তারের পরিবারে সদস্যরা তাকে খুঁজতে আসলে সে এই বাড়িতে ফাতেমা আসে নাই বলে জানিয়ে দেয়।
এই ব্যাপারে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনোজিৎ রায় জানান, তদন্ত শুরু থেকেই নিহত ফাতেমা আক্তার কার কার বাড়িতে নিয়মিত আসা যাওয়া করে, এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই সময় তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে নিশ্চিত হয়ে এই ঘটনায় নিহত ফাতেমা আক্তারের বান্ধবীর ভাই আবু রায়হানকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে পুলিশের কাছে পরবর্তীতে বুধবার বিকালে আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য: নিখোঁজে আট দিন পর গত শুক্রবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নে শাহবাজপুর গ্রামের পূর্ব পাড়ায় নির্জন পুকুর পাড় থেকে ফাতেমা (১০) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফাতেমা আক্তার ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী আল-আমিনের মেয়ে। সে শাহাবাজপুর গ্রামের মহিলা মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সে ২২ আগস্ট ফাতেমা বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর সে নিখোঁজ হয়। এরপর তাকে আত্মীয়-স্বজন সহ বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্বপাড়ায় নির্জন পুকুর পাড়া তার অর্ধগলিত লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে নবীনগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন