কখনো তিনি ডিআইজির বন্ধু, কখনো এসপির ঘনিষ্ঠ বন্ধু। জেলার পুলিশ প্রশাসনের পুলিশ সুপার (এসপি) ও এডিশনাল এসপি এবং থানায় গেলে ওসি ছাড়া আর কারোরই সঙ্গে বসে তিনি কথা বলতে রাজি নয়। দম্ভ নিয়ে কথা বলা লোকটি হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শিশু মিয়া ছেলে জিহাদ আহমেদ। অবশেষে বুধবার বিকেলে পুলিশে বড় কর্তাদের নাম ব্যবহার করে দম্ভক দেখানো প্রতারক জিহাদকে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এর আগে স্থানীয় কয়েকজনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে তাকে আটক করে পুলিশ। এরপর তার নামে চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যক্তি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জিহাদ স্থানীয় বিভিন্ন ডোবা-নালা থেকে মাছ ধরে বাজারে বিক্রয় করতেন। তার বাবা ছিলেন একজন রিকশা চালক। নানা অভিযোগের চাপে এলাকা ছাড়া ছিলেন বহুবছর। মাত্র কয়েকবছরের ব্যবধানে জিহাদ এখন কোটিপতি। চড়েন নিজের কেনা এসি গাড়ি প্রাইভেটকার নিয়ে। চোখেপড়ার মতো কোনো ব্যবসা না থাকলেও কালিকচ্ছ বাজার এলাকায় রয়েছে তার বিশাল অফিস। মাছের হ্যাচারির পাশাপাশি কিছু লোকের নাম ব্যবহার করে একটি সমবায় সমিতির অন্তরালে জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছেন চড়া সুদের ব্যবসা। বিভিন্ন তদবির বাণিজ্যের সুবাদে পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে ছিল তার দহরম-মহরম। সরাইল থানায় নতুন কোন ওসি আসলেই নানা ফন্দিফিকিরে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন তিনি। পরে সেই কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে চালিয়ে যেতেন নানা বাণিজ্য। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বায়োফ্লক মাছ চাষিদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে।
জিহাদের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জিহাদ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই থেকে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়েই থানাপুলিশসহ প্রশাসনের সকল দপ্তরে সাবলীল চলাফেরা করতেন তিনি। পুলিশের খাতায় পলাতক দেখালেও এই জিহাদ গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়েই মাসের পর মাস থানায় রাতদিন ঘন্টার পর ঘন্টা ওসির কক্ষে বসে আড্ডা ও নানা তদবির চালিয়ে গেছেন।
সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, জিহাদকে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তার বিরুদ্ধে আগে একটি মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা ছিল। জিহাদ আটকের খবরে একের পর এক তার প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ আসতে থাকে। এরমধ্যে একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন