আপডেট

x

টাকার অভাবে হয়নি দাহ্য, মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে একই পরিবারের ৬জনের মরদেহ

রবিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ | ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ |

টাকার অভাবে হয়নি দাহ্য, মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে একই পরিবারের ৬জনের মরদেহ
Spread the love

মানিকগঞ্জের দৌলুতপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ছয়জনের মরদেহ শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। তবে টাকার অভাবে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার চাষাভাদ্রা গ্রামের নিহতদের দেহ দাহ্য করা হয়নি। ফলে নিজ বাড়ির আঙিনায় মাটি চাপা দেয়া হয় লাশগুলো।

নিহতরা হলেন, নাগরপুর উপজেলার চাষাভাদ্রা গ্রামের বাদ্যকরপাড়ার প্রয়াত নিতাই বাদ্যকরের ছেলে হরেকৃষ্ণ বাদ্যকর (৫০), তার ছেলে গোবিন্দ বাদ্যকার (২৮), গোবিন্দের স্ত্রী ববিতা বাদ্যকর (২৫), মেয়ে রাধে বাদ্যকর (৪), গোবিন্দের দাদি খুকি বাদ্যকর (৭০), গোবিন্দের ধর্ম শ্বশুর একই এলাকার প্রয়াত জুড়ান বাদ্যকরের ছেলে রামপ্রসাদ বাদ্যকার (৩৫)। এছাড়াও এ ঘটনায় নিহত হন সিএনজি অটোরিকশা চালক দৌলতপুর উপজেলার সমেতপুর গ্রামের সদর আলীর ছেলে সিএনজি চালক জামাল শেখ (৩০)।

webnewsdesign.com

সকালে মরদেহগুলো মাটিচাপা দেয়ার ঘণ্টাখানেক পর জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিহতদের বাড়ি পরিদর্শন করে আর্থিক সহায়তা করেন।

ভাদ্রা গ্রামের ইউপি সদস্য মো. বেল্লাল সর্দার জানান, নিহতদের পরিবারে হরেকৃষ্ণ বাদ্যকারের স্ত্রী ঝর্না বাদ্যকার এবং নিহত দুই ভাইয়ের স্ত্রী ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই। তারা খুবই দরিদ্র। এক সঙ্গে ছয়জনের মরদেহ দাহ করতে ৭০-৮০ হাজার টাকার মতো প্রয়োজন। এতো টাকা ওই পরিবারের দেয়া সম্ভব নয়। তাই সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মরদেহ সকালে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে। তবে নিহতের স্বজনরা যদি দাহ করার দাবি জানাতেন তাহলে সহযোগিতা করা হতো।

ছয়জনের মরদেহ শেষকৃত্য না করে মাটি চাপা দেয়ার কথা স্বীকার করে ভাদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান খান জানান, সকালে মরদেহগুলো মাটিচাপা দেয়ার ঘণ্টাখানেক পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে হরেকৃষ্ণ বাদ্যকারের পরিবারসহ ছয়টি পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

নাগরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিন মসরুর জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, চাচাতো ভাই রাম প্রসাদ বাদ্যকারের পরিবারকে ১০ হাজার ও একইদিন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক জামাল শেখের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে।

মরদেহ দাহ্য করার বিষয়ে এসিল্যান্ড তারিন বলেন, একই পরিবারের ছয়জনকে টাকার অভাবে শেষকৃত্যের পরিবর্তে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে কি না তা আমি অবগত নয়। এ বিষয়ে কেউ অবগত করেননি। এছাড়াও যদি নিহতের স্বজনরা কেউ বিষয়টি অবগত করতেন তাহলে অবশ্যই প্রশাসনের পক্ষ থেকে শেষকৃত্য সম্পন্নের উদ্যোগ নেয়া হতো বলেও জানান তিনি।

নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত-ই-জাহান জানান, দুর্ঘটনায় ছয়জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক খবর রাখা হচ্ছিল। এছাড়াও ওই ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গেও দফায় দফায় কথা হয়। তবে টাকার অভাবে শেষকৃত্য হচ্ছে না তা জানানো হয়নি। এরপরও সকালে তারা সহযোগিতা করতে এগিয়ে যান ও সহযোগিতা করেছেন। তবে এর আগেই নিহতদের মাটি চাপা দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে নাগরপুর থেকে নাতনি রাধেকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের ডাক্তার দেখানোর জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রওনা দেন দাদা হরেকৃষ্ণসহ ওই পরিবারের ছয়জন। দুপুর আড়াইটার দিকে ঘিওর-দৌলতপুর আঞ্চলিক সড়কের মূলকান্দি এলাকায় বাস ও অটোরিকশাটির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হন ওই পরিবারের দুই নারীসহ ছয়জন।

সূত্র- জাগোনিউজ

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com