আপডেট

x

করোনায় র‍্যাবের মডেল চিকিৎসায় অর্ধশতাধিক সদস্য সুস্থ

রবিবার, ১০ মে ২০২০ | ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ |

করোনায় র‍্যাবের মডেল চিকিৎসায় অর্ধশতাধিক সদস্য সুস্থ
Spread the love

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় দারুণ একটি মডেল তৈরি করেছে এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বিশুদ্ধ অক্সিজেন পেলে ৯০ শতাংশ রোগীই সুস্থ হয়ে যায়। সেই বিশুদ্ধ অক্সিজেন তৈরির নতুন মডেলে তেমন কোনো বিশেষজ্ঞ তত্ত্বাবধান ছাড়াই র‌্যাবের অর্ধশতাধিক সদস্য সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

webnewsdesign.com

রাজধানীর পল্টনের একটি কমিউনিটি সেন্টারকে অস্থায়ী হাসপাতাল বানিয়ে সেখানে বসানো হয়েছে ‘কনসেনট্রেটর’ মেশিন। এই মেশিনে টানা অক্সিজেন তৈরি করা হচ্ছে। অস্থায়ী এই হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স সবাই র‌্যাবের সদস্য। তাদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক নেই। তারপরও সব সদস্যকে সুস্থ করে তুলেছেন তারা। এই পদ্ধতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশও ব্যবহার করছে। এই মেশিনের মূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক এই মেশিন ব্যবহার করে করোনা রোগীদের সুচিকিৎসা দিতে পারে। এতে করে ভেন্টিলেশনের তেমন প্রয়োজন হয় না। ঘরে এই মেশিন রেখে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব।

জানা গেছে, পল্টনের ঐ কমিউনিটি সেন্টারকে অস্থায়ী হাসপাতাল বানিয়ে র‌্যাবের করোনা পজিটিভ সদস্যদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যার যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, তাকে সেই ব্যবস্থায় রাখা হচ্ছে। রোগীদের যখন যার বিশুদ্ধ অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে, তখন তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। ‘কনসেনট্রেটর’ মেশিনের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করা হচ্ছে। এই মেশিন বিদ্যুতের মাধ্যমে চলে। তবে সেখানে ভেন্টিলেশনও রাখা হয়েছে। এই মুহূর্তে র‌্যাবের কাছে ৫০টি ‘কনসেনট্রেটর’ মেশিন রয়েছে। র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে সারাদেশে ব্যাটালিয়নগুলোকে এই মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই মেশিনে উৎপাদিত অক্সিজেনের ৯৫ শতাংশই বিশুদ্ধ। বাতাস ঘনীভূত করে এই অক্সিজেন তৈরি করা হয়। মিনিটে পাঁচ লিটার অক্সিজেন প্রস্তুত করা হচ্ছে একটি মেশিন দিয়ে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘র‌্যাবের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় করোনা রোগীদের সেবা দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এটা আমাদের নিজস্ব পদ্ধতি। আমরা নিজেরা ম্যানেজ করে করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের নিজস্ব ডাক্তার আছে। রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। র‌্যাবে সব সদস্যই সুচিকিৎসা পাচ্ছেন। র‌্যাবের অস্থায়ী হাসপাতালে ভেন্টিলেটর মেশিন রয়েছে, কিন্তু সেটা ব্যবহারের তেমন প্রয়োজন পড়ে না। ’

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, সামনে করোনার ভয়াবহ থাবা আসছে। তাই এখন থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। এক্ষেত্রে দেশের ১৪ হাজার বেসরকারি হাসপাতাল ও সব শিল্পকারখানার মালিকেরা র‌্যাবের এই মডেল অনুসরণ করতে পারেন। এতে রোগীরা সুচিকিৎসা পাবে। অনেক রোগী বেঁচে যাবে।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, করোনায় আক্রান্ত ৮০ শতাংশ রোগীই ঘরে বসে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে যাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। আর অক্সিজেন দিলে বেশির ভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে যায়। মাত্র ৫ শতাংশ রোগীর ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হয়। আবার আগে থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে গ্রহণ করা হলে ভেন্টিলেশনেরও প্রয়োজন হয় না। ‘কনসেনট্রেটর’ মেশিনের সাহায্যে উৎপাদিত অক্সিজেন ভেন্টিলেশনের বিকল্প হিসেবে কাজ দেয়।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিশুদ্ধ অক্সিজেন পেলে ৯০ শতাংশ করোনা রোগী সুস্থ হয়ে যায়। করোনা চিকিৎসায় র‌্যাবের মডেলটি খুবই যুগোপযোগী। এটিই হলো মূল চিকিৎসা। এখানে বিশষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন নেই। যে কেউ এই ব্যবস্থাপনায় করোনা রোগীদের সেবা দিতে পারেন। গার্মেন্টস মালিকসহ শিল্পকারখানার মালিকেরা এ ধরনের মডেল গ্রহণ করতে পারেন। এতে কেউ আক্রান্ত হলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইসোলেশনে নেওয়া যাবে। দেওয়া যাবে বিশুদ্ধ অক্সিজেন।

সূত্র-ইত্তেফাক

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com