ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় আখাউড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই উপজেলায় সীমান্ত ওই পাড়ে ভারত। গত এক সপ্তাহে কিশোরী ধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাও ঘটেছে এই উপজেলায়। মাদক চোরাচালান, চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ তো রয়েছে হরহামেশাই। করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো বিষয়ও বিদ্যমান। আসন্ন পৌর নির্বাচনকে ঘিরে সভা-সমাবেশেরও হিড়িক পড়েছে পৌর এলাকাতে। এই অবস্থায় উপজেলার আইনশৃঙ্খলা সভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু সর্বশেষ সোমবার (৯নভেম্বর) হওয়া উপজেলার মাসিক আইনশৃংখলা কমিটির সভাও যাননি ওই সভার সদস্য আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রসুল আহমদ নিজামী। সভায় একজন উপ-পরিদর্শক (এস.আই) কে ওসি’র প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানো হয়। শুধু গত সভায় নয়, বিগত ৩টি সভায় অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী এই সভায় কোন প্রতিনিধি পাঠানোর সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে আখাউড়া থানায় যোগদানের পর ওসি মো. রসুল আহমেদ নিজামী আইনশৃংখলা কমিটির সভায় প্রায়ই অনুপস্থিত থেকেছেন। আগে বেশিরভাগ সময় পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুল আমীন ও বর্তমানে পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদুল আলম চৌধুরীকে সভায় পাঠিয়ে দেন। সম্প্রতি শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও স্থানীয় মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রশাসনের এক সভায়ও আসেননি ওসি। বিষয়গুলো দৃষ্টিকটু হলেও সংশ্লিষ্ট কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলে বলত চান না।
সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে হওয়া সভায় এলাকায় মাদক বিস্তারের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ লক্ষ্যে এলাকাভিত্তিক কমিটি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানানো হয়। কোথাও কোথাও মাদক নির্মূলের নামে হওয়া কমিটিতে মাদক ব্যবসায়িরা রয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। এছাড়া উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন উপস্থিত সদস্যরা।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম এ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে বলেন, আইনশৃংখলা কমিটির সভায় উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দেয়াসহ বিভিন্নভাবে বলা হয়। মন্ত্রীপরিষদ নির্ধারিত সভা এটা। সভার দিন সকল অন্য প্রোগ্রাম বাতিল করে হলেও আইনশৃঙ্খলা সভায় অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এখানে প্রতিনিধি পাঠানোরও কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, প্রতি সভার উপস্থিতির সাক্ষর আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মন্ত্রী পরিষদে পাঠিয়ে থাকি। যদি কোন নির্দেশনা আসে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি নিশ্চিত করেন যে, আখাউড়া থানার ওসি রসুল আহমেদ নিজামী সর্বশেষ তিনটি সভায় আসেননি। তবে সভাগুলোতে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানানো হবে।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রসুল আহমেদ নিজামী বলেন, ‘আইন শৃংখলা কমিটির সভায় আমাকে থাকতেই হবে কথা নেই। সোমবার জেলাতে পুলিশের সভা থাকায় আমি ও পরিদর্শক (তদন্ত) কেউ যেতে পারিনি। আইনশৃংখলা কমিটির সভা থেকে জেলায় হওয়া সভা বড়। এর আগে একদিন আমি ছুটিতে থাকায় যেতে পারিনি। কিন্তু সব সভাতেই আমার প্রতিনিধি পাঠানো হয়। আমার বদলে যে দায়িত্বে থাকবে সেই হবে প্রতিনিধি।’
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন