সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও চলছে মরণব্যাধি করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় লড়াই। জনগণকে এই ভাইরাস থেকে রক্ষায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠে কাজে ব্যস্ত প্রশাসন। রাত-দিনের ঘুম হারাম করে তারা কাজ করে চলেছেন। দাম ফালানোর যেন ফুরসত নেই। তারা পরিবার পরিজনকে সময় দিতে পারছেন না কোন ভাবেই। এরই মাঝে গত ২৮ মার্চ হাসপাতালে স্ত্রী জন্ম দিয়েছেন একটি ফুট ফুটে কন্যা সন্তান। তবুও দেশে ও জাতির কল্যাণে তাদের সময় না দিয়ে মাঠে কাজ করে চলেছেন তিনি।
নাজিমুল হায়দার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন বেশি দিন হয়নি। এরই মাঝে তিনি নিজের কর্মের মাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছেন মানুষের হৃদয়ে। করোনা ভাইরাসের সচেতনতায় মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। ইউএনও নাজিম ঘুরে বেড়াচ্ছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। দম ফেলার ফুরসত নেই তার। এই ব্যস্ততার মাঝে গত ২৮ মার্চ তিনি একটি কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন।
নবজাতক কন্যা সন্তান ও স্ত্রীকে হাসপাতলে রেখে করোনাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি। কন্যা সন্তানের জনক হয়ে যারপরনাই খুশি ইউএনও নাজিমুল হায়দার। এরপরও করোনার মহামারি থেকে মানুষকে বাঁচানোর ভাবনা যেন তাকে বিষণভাবে তাড়িত করছে। রাতে ঢাকায় গিয়ে আবার প্রত্যুষেই ফিরছেন আশুগঞ্জে। সন্তান জন্ম নেবার এমন খুশিতেও মাত্র দু-একবার রাতেই ঢাকা গিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক আশুগঞ্জ উপজেলাতেও ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইউএনওর নেতৃত্বে করোনাভাইরাস প্রতিরোধসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন তিনি। প্রথম দিকেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশে আসা উপজেলার প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে সক্ষম হন তিনি। উপজেলাব্যাপী মাইকিং ও লিফলেট বিতরণসহ ব্যাপক প্রচারণা চালনো হয়েছে। ইসলামি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সকল মসজিদে ইমামদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধের নিয়মগুলো আলোচনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে জনসমাগম এড়ানো ও দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখার জন্য নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। আশুগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ও রাস্তায় জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডার স্প্রে করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং জনসমাগম এড়ানোর জন্য যখনই ফোন কল আসছে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।
সরকার প্রদত্ত খাদ্যসামগ্রী করোনা পরিস্থিতির শিকার উপজেলার অসহায়, গরীব ও দুস্থ মানুষের বাড়িতে তিনি নিজে পৌঁছে দিচ্ছেন।
উপজেলার বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, ‘ইউএনও স্যার সরকারের নির্দেশনা মেনে সাধারণ মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। পাশাপাশি আমরা কে, কোথায়, কিভাবে কাজ করছি তার সার্বিক তদারকি করছেন।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমুল হায়দার বলেন, যত কিছুই হোক আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি অতিরিক্ত কোন কিছু করছিনা, উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সকল কাজ আমাকেই করতে হবে।
আবুল হাসনাত মোঃ রাফি/—
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন