আখাউড়ায় শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজে দুই অধ্যক্ষ!

বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২ | ৯:০৮ অপরাহ্ণ |

আখাউড়ায় শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজে দুই অধ্যক্ষ!
Spread the love

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজে বর্তমানে দুইজন নিজেদের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবি করছেন। একই কলেজে দুই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়ে তোলপাড় চলছে উপজেলা জুড়ে। এ নিয়ে কলেজে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করে স্থানীয়রা।

দুজনের মধ্যে একজন অবসর নেওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়েছেন। আরেকজন দায়িত্ব নিয়েছেন শিক্ষকদের সমর্থন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। আর এ দুজন দায়িত্ব নিয়েছেন একই পদে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে।

webnewsdesign.com

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ও কাগজপত্র অনুযায়ী জানা গেছে, শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবু জামালের ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী ১১ অক্টোবর তিনি অবসরে যান। একইদিন কলেজের প্যাডে দেওয়া এক পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, কলেজের সভাপতি ও আখাউড়া উপজেলা উপেজলা নির্বাহী অফিসার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত সহকারি অধ্যাপক ওয়াহিদ সারোয়ারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) ওয়াহিদ সারোয়ার দায়িত্বভার গ্রহন করলেও বুধবার তিনি কলেজে আসেননি। যোগদান সংক্রান্ত কাজে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। বুধবার সকালে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব অর্পণে জেষ্ঠ্যতা লংঘনের অভিযোগ আনেন সহকারি অধ্যাপক ও আখাউড়া পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা।

সংবাদ সম্মেলনে মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা জানিয়ে ছিলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুযায়ি শেষ কর্মদিবসে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক হিসাবে আমার কাছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব হস্তান্তর করার কথা থাকলেও অবসরে যাওয়া আবু জামাল বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত কলেজে না এসে সময় ক্ষেপণ করেন। পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষকরা জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক হিসাবে আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেন। সরকারি বিধি মোতাবেক হওয়ায় ও প্রশাসনিক পদ শূণ্য থাকতে পারে না বিধায় আমি সম্মতি জ্ঞাপন করি। দায়িত্ব পালনে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা।

এ বিষয়ে অপর অধ্যক্ষ ওয়াহিদ সারোয়ার বলেন, ‘অবসরে যাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরামর্শ করে বিধি মোতাবেক আমাকে লিখিতভাবে দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু হুমায়ুন কবির মোল্লার কাছে এ ধরণের কোনো ডকুমেন্ট নেই। এখন থেকে আমি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবো।’

হুমায়ুন কবির মোল্লা এই বিষয়ে বলেন, ‘নিয়ম অনুসারে জেষ্ঠতার ভিত্তিতে দায়িত্ব দেওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে সেটা করা হয়নি। কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা আমাকে দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করেছেন। আমি সকলের সহযোগিতায় দায়িত্ব পালন করতে চাই।’

অবসরে যাওয়া অধ্যক্ষ আবু জামাল বলেন, ‘আমি তিনজনের নাম প্রস্তাব করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি। তবে হুমায়ুন কবিরের নামে মামলা থাকায় আমাকে বলা হয়েছে ওয়াহিদ সারোয়ারকে দায়িত্ব দিতে। সে অনুযায়ি আমি উনাকে দায়িত্ব দিয়েছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ইউএনও মূলত আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা হলেও সভাপতি হিসেবে প্রচলিত।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। বিধি মোতাবেক যদি এই বিষয়ে কিছু করার থাকে তাহলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com