নাসিরনগরে ১৩ বছরের শিশু জন্ম দিল আরেক শিশু,মিমাংসা করতে দৌড়ঝাঁপ

রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ |

নাসিরনগরে ১৩ বছরের শিশু জন্ম দিল আরেক শিশু,মিমাংসা করতে দৌড়ঝাঁপ
প্রতীকী ছবি
Spread the love

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উপজেলায় ১৩ বছর বয়সের এক শিশুর গর্ভে জন্ম নেওয়া আরেক শিশুর জন্ম নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। ওই শিশুর পরিবার আইনের সহায়তা না নেওয়ায় স্থানীয় মাতব্বরেরা বিচার-সালিশ করে ঘটনা ধাপাচাপা দেওয়ার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগের তীর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের সিংহগ্রামের নরেশ মল্লিকের ছেলে হরিদাস ভৌমিকের দিকে।

ভুক্তভোগী শিশুর মা সংবাদিকদের জানান, আমার স্বামী বাড়িতে থাকেনা। আমিও মানুষের বাড়িতে কাম-কাজ করি। নিজের ঘর-বাড়ি না থাকায় হরিদাস ভৌমিকের বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে থাকতাম। কিন্তু আমাদের বাড়িতে না থাকার সুযোগে হরিদাস আমার মেয়েকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। সেই ধর্ষণের ফল আজ আমার শিশু মেয়ের কোলে আরেক শিশু সন্তান জন্ম নিছে। শিশুটির জন্ম হয়েছে ১০দিন হয়ে গেল। তিনি আরও বলেন, গ্রামের লোকজন মিলে সালিশ করে আমার মেয়েরে হরিদাস স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সেটা চার বছর পর। চারবছর পর মেয়েরে নিয়ে সে ঘর সংসার করবে কিনা সে শংঙ্কায় আছি।

webnewsdesign.com

এদিকে গতকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রামের শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বিচার-সালিশের আয়োজন করে এলাকাবাসী। সালিশে একটি জুরিবোর্ড করে ৩০০ টাকার একটি ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কিছু শর্ত দিয়ে চুক্তি করার সিন্ধান্ত হয়। চুক্তিতে উল্লেখ থাকবে, মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে উভয়ের বিয়ে হবে। পাশাপাশি মেয়েটিকে ৩০ শতক জমি দেওয়া হবে মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য।

উপস্থিত থাকা সালিশকারক রামপ্রসাদ মল্লিক বলেন, যেহেতু মেয়েটির বয়স ১৮ হয়নি তাই আইনগতভাবে বিয়ে দেওয়া যাবে না। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এলাকাবাসীর সম্মতিতে। আইন আদালত ছাড়া গ্রাম্য সালিশে ধর্ষণের বিচার কতটা যৌক্তিক জানতে চাইলে বলেন, সবাই মিলে যে সিদ্ধান্ত নিছে সেটাই রায়ে ঘোষণা করা হয়েছে।

অভিযুক্ত হরিদাস ভৌমিকের বক্তব্য নিতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার ছোট ভাই গৌরদাস ভৌমিকের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি দাবী করে বলেন, আমার ভাই এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে তাকে জানান। তাই আদালতের মাধ্যমে উভয়ের ডিএনও টেষ্ট করে পরীক্ষার পর আমার ভাই দোষী হলে যে কোন রায় আমরা মেনে নেব।

এ বিষয়ে নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরবছি।এই ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন বলেন, ইতিমধ্যে আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। খোঁজ নিয়ে দেখেছি ঘটনাটি সত্য এবং খুবই দুঃখজনক। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা আইনের সহায়তা চাইলে আমাদের পক্ষ থেকে সকলপ্রকার সহায়তা করা হবে।

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com