সৌদি আরবে জিলহজ মাসের ৯ তারিখকে বলা হয় আরাফার দিন। হাজিরা মিনায় ফজরের নামাজ শেষে নিয়ম অনুযায়ী রওয়ানা দেন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে। সেখানে হজযাত্রীরা মসজিদে নামিরাহে একই ইমামের পেছনে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন। আরাফাতের বিশাল প্রান্তরে অবস্থান করে মসজিদে নামিরাহ থেকে প্রদত্ত খুতবা শুনবেন। যা বাংলাসহ ৯টি ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করা হবে। সূর্যাস্তের পর আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করবেন হাজিরা।
মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঐতিহাসিক এই আরাফাতের ময়দান। ১৪০০ বছর আগে এই ময়দানেই মোহাম্মদ (সা.) লক্ষাধিক সাহাবিকে সামনে রেখে ঐতিহাসিক বিদায়হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
আরাফাতের ময়দানকে বলা হয় দোয়া কবুলের স্থান। এখানেই মুসলমানদের আদি পিতা হজরত আদম ও হাওয়া (আ.) এর পুনর্মিলন হয়েছিল। এই ময়দান মোহাম্মদ (সা.)-এর বিদায়হজের ভাষণের স্মৃতিবিজড়িত। সূর্য হেলে পড়ার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজিরা বিভিন্ন গ্রুপে এবং আলাদা আলাদাভাবে দোয়া করতে থাকেন।
সূর্যাস্তের সাথে সাথেই আবার মিনায় ফেরার পথে মুজদালিফা নামক স্থানে রাতে অবস্থান নেবেন হাজিরা। সেখানে রাতে অবস্থান করবেন খোলা আকাশের নিচে। একসাথে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। মিনায় জামারাতে শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপের জন্য এখান থেকেই কঙ্কর সংগ্রহ করবেন তারা।
মুজদালিফায় রাত কাটানোর পর ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ শেষে সূর্যাস্তের আগেই মিনার দিকে রওয়ানা হবেন হাজিরা। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা একজন হাজির জন্য পরম সৌভাগ্যের বিষয়। এখানে অবস্থান হজের অন্যতম ফরজ।
ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হচ্ছে হজ। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মুসলিমকে অবশ্যই অন্তত একবার হজ পালন করতে হবে। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় এই অনুষ্ঠানে প্রতি বছরই লাখ লাখ মুসল্লি জড়ো হন। এর আগে ২০১৯ সালে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ হজে অংশ নিয়েছিলেন। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট মহামারির কারণে গত বছর থেকেই এই চিত্র অনেকটা বদলে গেছে।
জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ এই ছয় দিনেই হজের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। আজ জিলহজ মাসের ৯ তারিখ।
চলতি বছর সৌদি আরব নিজের দেশের মাত্র ৬০ হাজার নাগরিককে হজ পালনের অনুমতি দিয়েছে। গতবছরও বিধিনিষেধের মধ্যেই হজ পালনের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। ফলে যে পাঁচদিন হজের আনুষ্ঠানিকতা ছিল তার মধ্যে কারও দেহে করোনা সংক্রমণ ঘটেনি। গত বছরের এই সফলতার কারণে এবারও সীমাবদ্ধতার মধ্যেই হজ পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এবারও বিভিন্ন দেশের হজযাত্রীদের হজ পালনের অনুমতি দেয়নি সৌদি আরব। তবে এ বছর লটারির মাধ্যমেই সৌদি আরব তাদের নাগরিকদের মধ্য থেকে হজযাত্রী নির্বাচন করেছে।
সূত্র-জাগোনিউজ
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন