ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী বিজয়নগর উপজেলায় লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষির উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত এই উপজেলায় এবার প্রথমবারের মতো চাষিরা লটকন চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। উপজেলার প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ করা হয়েছে। এ বছর প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।
জানা যায়, উপজেলার পাহাড়ি এলাকার লাল মাটিতে লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। লটকনের বাগানে গাছগুলোতে থোকায় থোকায় ঝুলছে লটকন। এলাকার বিভিন্ন স্থানে কাঁঠাল লিচু মালটার বাম্পার ফলন হলেও উপজেলার চম্পকনগর, মেরাসানি, সিঙ্গারবিল ও পাহাড়পুর এলাকায় লটকনের চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগবালাই না ধরায় লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ঈদের পর থেকে শুরু হয়েছে লটকন বাজারজাতকরণ।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, রসালো লটকনে বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাগান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন এসে লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে লাভবান হচ্ছে বাগানের মালিক। এসব লটকন কিনে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এছাড়াও নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী ভৈরব, কুমিল্লা ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বাজারে।
লটকন বাগানের মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি বছর আমাদের এলাকায় লিচু, কাঁঠাল, মাল্টা, আমসহ বিভিন্ন ফল উৎপাদন হয়ে আসছে। এসব দেখে ৭-৮ বছর আগে ময়মনসিংহ থেকে লটকন চারা এনে লাগাই। লাগানোর সময় এলাকার অনেকেই হাসাহাসি করছিল। ২ বছর ধরে কিছু কিছু গাছে লটকন ধরলেও এ বছর সব গাছে লটকন ধরেছে। লক্ষাধিক টাকার ওপরে লটকন বিক্রি হবে আশা করছি। কৃষি অফিসের লোকজন নিয়মিত খোঁজখবর এবং বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে লটকন চাষ করতে পারব।
সিংগারবিল গ্রামের জাকির মিয়া বলেন, লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাইকাররা বাগান থেকে এসে ৬০-৭০ টাকা কেজি ধরে নিয়ে যায়। তাছাড়াও লটকন গাছের নিচে আদার চাষও করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাব্বির আহমেদ বলেন, বিজয়নগরের মাটি উর্বর, এই এলাকার উৎপাদিত নিচু, কাঠালসহ বিভিন্ন ফল দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মত এবার উপজেলার ২০-২৫ জন উদ্যোক্তা ১৫ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ শুরু করেছে। আবহাওয়া লটকন চাষের উপযুক্ত হওয়ায় লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং প্রায় ৭০-৮০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি হবে। উপজেলা কৃষি অফিস চাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারিভাবে চাষিদের সারসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া চাষিদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে।
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন