ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় নিহত ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার কবর জিয়ারত ও বাড়িতে যেতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার লোকজনের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে দুই ইউপি সদস্যসহ ২০জন আহত হয়েছে। শনিবার (০৩ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা কবর করতে গেলে সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে।
বিএনপর নেতাকর্মী, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার নয়ন মিয়ার কবর জিয়ারত ও তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করতে বিএনপির নেতা সায়দুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে চরশিবপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে বিএনপির নেতাকর্মীরা রওয়ানা হন। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সাবেক মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে অধ্যাপক খন্দকার আকবর হোসেনসহ ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উপজেলার দশানি ঘাট অতিক্রম করে তারা চরশিবপুর ঘাটে পৌঁছলে সেখানে আগে থেকে বসে থাকা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহিন ও তার লোকজন বিএনপির নেতাকর্মীদের বাঁধা দেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা বাঁধা অতিক্রম করে চরশিবপুর গ্রামে পৌঁছে নয়নের কবর জিয়ারত করেন।
বাঁধা দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে নিহত নয়নের গ্রাম চরশিবপুরের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একত্রে জড়ো হন। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহিন ও তার লোকজনের সঙ্গে চরশিবপুর গ্রামের লোকজনের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে অন্তত ২০জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহতরা হলেন, সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মনির হোসেন ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান, সোনারামপুর ইউনিয়নের যুবলীগের ৩নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি আইনউদ্দিন ভূঁইয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ওরফে আয়নাল(৪৫),যুবলীগ কর্মী জয়নাল মিয়া (৪৫), স্থানীয় আমির উদ্দিন (১৮), ফয়জন আলী (২৩), জাহিদুল হাসান (২২), রাসেল মিয়া (৩২)।
তারা বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে মনির, জয়নাল ও আনোয়ারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
উপজেলার ছাত্রদলের সদস্য সচিব লিটন খন্দকার বলেন, সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন লোকজন নিয়ে আমরা নৌকায় করে ঘাট পার হতেই আমাদের বাঁধা দেন। বাঁধা অতিক্রম করেও করব জিয়ারত করতে পেরেছি। কিন্তু গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন বলেন, আমরা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাঁধা দেয়নি। গ্রামের লোকজন ভেতর থেকে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, আহত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। গ্রামের লোকজনের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
উল্লেখ্য, সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি নয়ন (২৬) গত ১৯ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরে লিফলেট বিতরণ কালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষকালে গুলিতে নিহত হন ।
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন