আপডেট

x

তদন্ত মিললো অনিয়মের সত্যতা, সরাইলে স্কুলের সভাপতি-প্রধান শিক্ষককে শোকজ

রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩ | ২:১৩ অপরাহ্ণ |

তদন্ত মিললো অনিয়মের সত্যতা, সরাইলে স্কুলের সভাপতি-প্রধান শিক্ষককে শোকজ
Spread the love

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়া প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন থেকে প্রতিবেদন দাখিল করার ৪ বছর পর এই শোকজ করে মাউশি। নোটিশে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা লিখিত দিতে বলা হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন, অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির তৎকালীন সভাপতি কুতুবউদ্দিন ভূইয়া ও প্রধান শিক্ষক শেখ সাদি। এরমধ্যে কুতুবউদ্দিন ভূইয়া মারা গেছেন।

webnewsdesign.com

২০১৮ সালের জুন মাসে জেলা প্রশাসক বরাবর অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহের উদ্দিন সহ ৫জন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ইশরাতকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্ত শেষে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী নানান অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক বরাবর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেন।

সেই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সাদী এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কুতুব উদ্দিন ভূইয়া প্রতিষ্ঠানের নামে নতুন ব্যাংক হিসাব খুলে অর্থ আত্মসাৎ ও তছরুপের ঘটনা ঘটিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির একটি ভবন নির্মাণ করছেন দুই কোটি টাকা ব্যয়ে। অথচ এই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি কোনও নিয়ম মানা হয়নি। এই অর্থও লেনদেন করা হয়েছে নতুন ব্যাংক হিসাবে। এছাড়া বিভিন্ন অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে তদন্তে।

আরও পড়ুন: সরাইলে দীর্ঘদিনেও দোকানের চুক্তির কাগজ না দেওয়ার অভিযোগ, আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা

অভিযোগকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহের উদ্দিন বলেন, ‘একটি মার্কেট ভবন নির্মাণ করা হয় অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। এতে কোনও ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ করা হয়নি। মার্কেটের দোকান বরাদ্দের জন্য ৩০ জনের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা করে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে না রেখে অন্য আরেকটির মাধ্যমে অর্থ খরচ করছেন প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতি। এই খরচের কোনও ক্যাশবই নেই। গাছ বিক্রির টাকা ব্যাংকের কোনও হিসাবে জমা দেননি। এসব অভিযোগ ছাড়াও বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এখন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করা হবে বলে প্রত্যাশা করছি। ‘

এই বিষয়ে অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হামিদুল হক বলেন, আমি একটি চিঠি পেয়েছি। কিন্তু এসব অভিযোগ আমার সময়ের নয়। এগুলো দীর্ঘদিন আগে। আমি দায়িত্ব নিয়েছিল মাত্র কয়েকমাস হলো।

অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সাদি বলেন, ‘ইমেইলের মাধ্যমে কারণ দর্শানোর চিঠি পেয়েছি। তবে অভিযোগ এই সভাপতির সময়ের নয়। তখন সভাপতি ছিলেন কুতুবউদ্দিন ভূইয়া, তিনি মারা গেছেন। এই শোকজের জবাব আমি নির্দিষ্ট সময়ে লিখিত ভাবে প্রদান করবো।’

এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হোসেন বলেন, ইমেইলের মাধ্যমে আমি কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি ১৭ অক্টোবর। ওই বিদ্যালয়ের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকও একই দিন ইমেইলের মাধ্যমে চিঠি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি সঠিক সময়ে লিখিত জবাব না দিলে বা তার জবাব সন্তোষজনক না হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মাউশি।

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com