নতুন নিয়মে রেলওয়ের টিকেট চালুর সাথে পদ্ধতি পাল্টেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের কালোবাজারিরাও। গত ১ মার্চ থেকে চালু হয়েছে নতুন পদ্ধতিতে ট্রেনের টিকেট কাটার পদ্ধতি। এই নিয়মের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে টিকেট ক্রয় করতে হয়। এই নিয়ম চালুর দুইদিন পর আসন বিহীন টিকেট ক্রয়ের সময় পরিচয়পত্রের বাধ্যবাধকতা বাতিল করেছে। মূলত টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে এই নিয়ম চালু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এতেও প্রতিরোধ করা যায়নি রেলওয়ে টিকেটের কালোবাজারির স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে। রেলের নতুন নিয়মের সাথে কালোবাজারিরাও নতুন নিয়ম চালু করেছে।
সরেজমিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, আগের মতোই স্টেশনের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে টিকেট কালোবাজারিরা। কয়েকজন উচ্চস্বরে ডাকছেন-‘ঢাকা-ঢাকা-চট্রগ্রাম-চট্রগ্রাম” বলে। টিকেট কিনতে যাত্রীরাও আসছেন। কিন্তু বিক্রয়ের সময় নতুন পদ্ধতিতে শর্তে জুড়ে দিচ্ছেন কালোবাজারিরা। তাদের তৈরি নিয়মে প্রতিটি আসন সহ টিকেটের সাথে আসন বিহীন টিকেট নিতে হচ্ছে যাত্রীদের। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকায় ট্রেনের শোভন আসনের ভাড়া ১৪৫টাকা এবং এসি ২৭০ টাকা। কালোবাজারিরা প্রতি শোভন আসনের টিকেট বিক্রয় করছে ৪০০টাকা এবং এসি আসনের টিকেট ৫৫০-৬০০টাকায় বিক্রয় করছে।
সামিয়া আক্তার নামের এক ঢাকাগামী এক ট্রেন যাত্রী জানায়, আমাকে পারিবারিক একটি কাজে দ্রুত ঢাকায় যেতে হচ্ছে। কাউন্টারে টিকেট শেষ হয়ে গেছে। বাসের যেতে অনেক সময় লাগে। দেখলাম পাশেই ব্ল্যাকাররা টিকেট বিক্রয় করছে। সন্ধ্যার মহানগর ট্রেনের টিকেট নিয়েছি ৪০০টাকায়। সাথে একটি স্ট্যান্ডিং টিকেট ক্রয় করতে বলেছে তারা। ট্রেনে চেকিং করলে স্ট্যান্ডিং টিকেট দেখাতে বলেছে।
মহিবুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী বলেন, বাসে সড়কে যেতে অনেক সময় লাগে। তাই সবসময় ট্রেনেই ঢাকায় যাতায়াত করি। নতুন নিয়মে আমিও রেজিষ্ট্রেশন করেছি। কিন্তু কাউন্টারে টিকেট শেষ। বাধ্য হয়ে ব্ল্যাকারের কাছ থেকে টিকেট নিয়েছি। শুধু একটি স্ট্যান্ডিং টিকেট কাটতে বলছে। মোবাইল কোর্টে ধরলে স্ট্যান্ডিং টিকেট দেখাতে বলছে। আসন সহ টিকেট যেন না দেখাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টিকিট কালোবাজারি জানায়, নতুন পদ্ধতিতে সরাসরি আমরা টিকিট নিতে পারি না। আলাদা আলাদা পরিচয়পত্র দিয়ে টিকেট কাটতে হয়। যার আইডি কার্ড দিয়ে টিকিট কাটে, তাকে প্রতি টিকেটে ১০০টাকা করে দিতে হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ উপপরিদর্শক হাতেম আলী ভূইয়া কাছে দাবি করেন, নতুন নিয়মে কালোবাজারিরা টিকেট ক্রয় করতে পারেন না। এখন কালোবাজারি নেই স্টেশনে। কিন্তু প্রমাণ থাকার কথা জানালে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
Development by: webnewsdesign.com
মন্তব্য করুন