আপডেট

x

প্রতি মণ ধানে লোকসান দেড়শ থেকে দুইশ টাকা

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০১৯ | ১০:০৪ অপরাহ্ণ |

প্রতি মণ ধানে লোকসান দেড়শ থেকে দুইশ টাকা
Spread the love

সরকারের ক্রয়নীতি ঘোষণার পরও ধানের দাম না বাড়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকামে ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ফলে ধান উৎপাদন করে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে। তবে উৎপাদন ব্যায়ের চেয়ে দাম কম হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষকরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ইরি-বোরো মৌসুমে অনেক কৃষক চাষাবাদ থেকে বিরত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে অনেক কৃষক। পাশাপাশি বাজারে এখনো পুরোনো চাল থাকায় দানের দাম বাড়ছে না বলে জানান অনেকেই। তবে মিল মালিকরা বলছেন সরকারিভাবে রপ্তানি চালু হলে চালের দাম অনেকটাই বাড়বে।

সরেজমিনে আশুগঞ্জ ধানের মোকামে গিয়ে জানা যায়, বৃহত্তর হাওরঅঞ্চল কিশোরগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহসহ দেশের স্থান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মণধান আশুগঞ্জ মোকামে আসে। আর এসব ধান স্থানীয় ৪শতাধীক রাইছ মিলে প্রক্রিয়াজাত করে চালে রূপান্তর করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও নৌ পথে সরবরাহ করে এসব এলাকার চাউলের চাহিদা পুরণ করে।

webnewsdesign.com

চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের হাজার হাজার মণ নতুন ধান ইতোমধ্যেই আশুগঞ্জ মোকামে আসতে শুরু করেছে। তবে শিলা বৃষ্টি ও সেচের অভাবে এবার জমিতে ফলন কম হয়েছে। পাশাপাশি ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় আশুগঞ্জ মোকামে ধান আসছে অনেক কম। জমিতে চাষাবাদ করে যে টাকা খরচ হয়েছে সে টাকার ধানও জমিতে হয়নি। এ জন্য অন্যান্য বছরের বৈশাখ মাসের এই সময়ের তুলনায় অর্ধেক ধান এসেছে বাজারে।

কৃষকরা বলছেন, মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে জমিতে চাষাবাদ করেছেন তারা। চলতি বছরে শ্রমিক সংকট, মজুরি বৃদ্ধিসহ মালামালের দাম বেশি থাকায় আমাদের উৎপাদন খরচ হয়েছে বেশি। প্রতি মন ধান উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ৮’শ থেকে সাড়ে ৮’শ টাকা। কিন্তু বাজারে প্রতিমন ধান বিক্রি হচ্ছে গড়ে সাড়ে ৬’শ থেকে সাড়ে ৬’শ টাকা। এতে করে আমাদের উৎপাদন খরচ উঠবেনা। প্রতি মন ধানে আমাদের দুইশ থেকে দেড়শ টাকা লোকসান হচ্ছে।

আশুগঞ্জ ধানের মোকামে প্রতিমণ বুরো ধান বিআর ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬’শ ২০ থেকে ৬’শ ৩০ টাকা পর্যন্ত। বি আর ২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫’শ ৭০ টাকা। মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৫’শ টাকা ও ভেজা ধান বিক্রি হচ্ছে ৪’শ ৫০ টাকা।

সিলেট থেকে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক হাজী আবু তাহের বলেন, শ্রমিকের মজুরি, সার, কিটনাশক, বীজ সব মিলিয়ে মনপ্রতি ধান উৎপাদন খরচ ৮’শ টাকার মত পড়ে যায়। এখন বিক্রি করতে আসার পর শুনতে পাচ্ছি ৫’শ থেকে ৬’শ টাকা। প্রতি মনে ১৫০ থেকে ২’শ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই অল্প কিছু ধান বিক্রি করেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া চাতালকল ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়ায়দুল্লাহ বলেন, চলতি মৌসুমে হাওরে শিলা বৃষ্টি ও ধানে চিটার কারণ হাওরে ধানের ফলন কম হয়েছে। এ জন্য আশুগঞ্জ মোকামে ধান আসছে কম। সেই সাথে চাতালে পর্যাপ্ত পরিমানে ধান ও চাউল মজুদ থাকায় ব্যবসায়ীরা ধান ক্রয় করছে কম। তবে সরকার যদি রপ্তানির অনুমতি দিত তাহলে চালের দাম বেড়ে যেত। তাই ধানের দাম বৃদ্ধির জন্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি অনতিবিলম্বে বাংলাদেশের চাল রপ্তানির অনুমতি দিলে ব্যবসায়ীরা যেমন উপকৃত হবে পাশাপাশি কৃষকরাও ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে।

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com