আপডেট

x

চলছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ

রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ | ১১:২২ পূর্বাহ্ণ |

চলছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ
Spread the love

নানা আলোচনা-সমালোচনা, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পর অবশেষে মাঠে গড়িয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। রোববার সকাল ৮টায় সারাদেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

২০১৪ সালে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হওয়ায় অর্ধেকের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন প্রার্থীরা। সেইসঙ্গে এবার এক কোটির বেশি নতুন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। স্বাভাবিকভাবেই দেশের ভোটারদের বড় একটা অংশের কাছে এই ভোট উৎসবের।

webnewsdesign.com

তবে উৎসবের এই ভোট নিয়ে রয়েছে নানা শঙ্কাও। গতকাল ভোটের আগে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নানা অভিযোগ করেছে। দেশের কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটেছে।

ঐতিহাসিক এ নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল শনিবারই যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, এই নির্বাচন রাজনৈতিক ইতিহাসের বাঁক বদলে দেবে। পাল্টে দেবে স্বাধীন বাংলাদেশের গতিপথ।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ দশ বছর পর ভোটের মাঠে আবারও মুখোমুখি হয়েছে শীর্ষ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নৌকা আর বিএনপির ধানের শীষ। ক্ষমতা পালাবদলের এই ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছে নিবন্ধিত ৩৯টি দলের সব কটি।

প্রার্থীর মৃত্যুতে একটি আসনের নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ায় রোববার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৯৯টি আসনে। এর মধ্যে ছয়টি আসনে ভোট হবে ইভিএমের মাধ্যমে। সারা দেশে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এক হাজার ৮৬১ জন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র ১২৮ এবং রাজনৈতিক দলের প্রার্থী এক হাজার ৭৩৩ জন।

ভোটকে কেন্দ্র করে সারাদেশে মোতায়েন করা হয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার পুলিশ, ১০ হাজার র‌্যাব, এক হাজার ১২৭ প্লাটুন বিজিবি, সেনাবাহিনী (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন) ৩৮৯টি উপজেলায় ৪১৪ প্লাটুন, নৌবাহিনী ১৮টি উপজেলায় ৪৮ প্লাটুন, কোস্টগার্ড (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন) ১২টি উপজেলায় ৪২ প্লাটুনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের প্রায় ছয় লাখ আট হাজার সদস্য।

সব বাহিনীর সমন্বিত টহলে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা ঠেকাতে কঠোর নজরদারি চলছে সাইবার ওয়ার্ল্ড ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

নির্বাচন নিয়ে গুজব ও উস্কানি ঠেকাতে আইসিটি মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট, র‌্যাবসহ প্রতিটি বাহিনীর সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করছেন অনলাইনে। এ ছাড়া নির্বাচনের এই কয়েকদিন ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও নিবিড় যোগাযোগ রাখছে পুলিশ। যেকোনো অপ্রীতিকর পোস্ট সম্পর্কে সঙ্গে সঙ্গেই রিপোর্ট করা হবে ফেসবুককে।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে ইলেকশন কমিশন, রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় এবং ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘিরে নিশ্ছিদ্র এবং সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এখন থেকে শুরু করে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর নিরাপত্তার চাদরে আবৃত থাকবে। প্রস্তুত থাকবে আমাদের বোম ডিস্পোজাল টিম, সোয়াট ও কে-৯ ইউনিট।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সমন্বয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও স্থাপনায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি সাইবার দুনিয়ায় যেন কেউ কোনো ধরনের গুজব উস্কানিমূলক তথ্য না ছড়ায় সে বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে।

র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, ৩০ তারিখ শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত করতে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী র‌্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। আমরা হেলিকপ্টার ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছি। নিজেদের দুটি এবং সেনাবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। বিশেষ প্রশিক্ষিত একটি স্পেশাল ফোর্স ঢাকায় প্রস্তুত থাকবে। দেশের যেকোনো প্রান্তে কোনো গোষ্ঠী সহিংসতার দুঃসাহস দেখালে দ্রুততম সময়ে স্পেশাল ফোর্সের সদস্যদের পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, দেশজুড়ে র‌্যাবের ১০ হাজার সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে ৫৭টি বিশেষ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। আমাদের বোমা নিষ্ক্রিয় দল দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রস্তুত থাকবে। সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। ভোটকেন্দ্রে নিরাপদে ভোটারদের যাতায়াত এবং ভোটাধিকার প্রয়োগে আমাদের দায়িত্ব, উদ্দেশ্য এবং কর্তব্য পালনে সর্বোচ্চ প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।

গুজব ঠেকাতে গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে বেনজীর বলেন, সাইবার ওয়ার্ল্ডে একটি গোষ্ঠী মিথ্যা তথ্য প্রচারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তারা এসব গুজব প্রচারে লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। গত দুই মাস বা তারও বেশি সময় ধরে এসব গুজব প্রতিরোধে র‌্যাব সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

‘র‌্যাব-সাইবার নিউজ ভেরিফিকেশন সেন্টার’ নামে একটি ফেসবুক পেজ চালু করা হয়েছে। সাইবার ওয়ার্ল্ডের যেকোনো নিউজ, তথ্য ভিডিও সম্পর্কে সন্দিহান হলে কেউ যদি ওই পেইজে যোগাযোগ করে, তাহলে দ্রুততার সঙ্গে আমরা যাচাই করে ফিডব্যাক দেব। একটি টিম সার্বক্ষণিক এই দায়িত্ব পালন করবে।

মন্তব্য করুন

Development by: webnewsdesign.com